৩০ দিনের জার্নি

গত ৩০ দিনের কথা, মনে রবে আজীবন। একেবারে আজীবন। একের পর এক মাস্টারপিস পড়ে গিয়েছি বিরতিহীন। মন ভারাক্রান্ত হয়ে ছিল বিভিন্ন কারণে। আর বইয়ের প্রভাব তো ছিলোই।

পুতুল নাচের ইতিকথা কোথাও কেউ নেই ন হন্যতে আরণ্যক শঙ্খনীল কারাগার

কোনটার চেয়ে কোনটা কোনোদিক দিয়ে কম না। বার বার বেদনার্ত হয়েছে মন। একটার প্রভাব কাটাতে না কাটাতেই আরেকটা শুরু করেছি। আপাতত কিছুদিনের বিরতি নিবো । স্পেশালি "শঙ্খনীল কারাগার" এর রাবেয়ার চিঠিটা অন্তরটাকে তছনছ করে দিচ্ছে।

"দিতে পার একশো ফানুস এনে? আজন্ম সলজ্জ-সাধ একদিন আকাশে কিছু ফানুস উড়াই।"

আর শেষের দিকে খোকার বুকফাটা আর্তনাদ, "কোন কোন রাতে অপূর্ব জোছনা হয়। সারা ঘর নরম আলোয় ভাসতে থাকে। ভাবি, একা একা বেড়ালে বেশ হতো। আবার চাদর মুড়ি দিয়ে নিজেকে গুটুয়ে ফেলি। যেন বাইরের উথালপাতাল চাঁদের আলোর সঙ্গে আমার কোন যোগ নেই।

মাঝে মাঝে বৃষ্টি নামে। একঘেয়ে কান্নার সুরের মতো সে শব্দ। আমি কান পেতে শুনি। বাতাসে জামগাছের পাতায় সরসর শব্দ হয়। সব মিলিয়ে হৃদয় হা-হা করে উঠে। আদিগন্ত বিস্তৃত শূন্যতায় কি বিপুল বিষণ্ণতাই না অনুভব করি। জানালার ওপাশের অন্ধকার থেকে আমার সঙ্গীরা আমায় ডাকে। একদিন যাদের সঙ্গ পেয়ে আজ নিঃসঙ্গতায় ডুবছি।"

জীবন সুন্দর আবার নির্মম। এই নির্মমতাকে সঙ্গী করেই আমরা বাঁচি। প্রত্যেকের কষ্টের রুপ-ধরণ আলাদা। তবুও তো আমরা সুখী হতে চাই দুঃখকে ধারণ করে অস্থির মনের বিষণ্ণতায়। হয়তো পারি কিংবা পারার অভিনয় করে যাই আজীবন। নিজের দুটো লাইন আবার শেয়ার করতে ইচ্ছে করছে।

"আমি তো খুব ভালোই আছি, মিথ্যে বলি অবিরত। জোনাক নাচা রাতগুলোতে, ফানুস উড়াই ইচ্ছেমতো।"

শশী ডাক্তার, অমৃতা, মুনা কিংবা রাবেয়া। জীবন কারো জন্যেই সহজ ছিলোনা। আমাদের কারো জন্যেও না। তাদের ঘটনা উপন্যাসে উঠে এসেছে। আমাদের ঘটনা আসবে না, এই যা।

অথবা হয়তো আসবে, অন্য কারো হাতে, অন্য কোন রূপে...। তখন হয়ত আমরা পড়ে অবাক হবো, চোখের পানিও ফেলবো...।। নিরবে ... নিভৃতে... সবার দৃষ্টির আড়ালে...