সেকুলারিজমের নামে হিন্দুইজমের চর্চা
বাঙ্গাল সেকুলারিজম হইল “ছেচড়াইজম”। এইটার মতো ছেঁচড়ামি তাবৎ দুনিয়াতে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। নিজেরে সে প্রগতিশীল কইতে চায়। এই জন্যে আল্লাহর নাম কইতে তার শরম লাগে। “প্রকৃতির কি অপার করুণা!”। “স্রষ্টাকে ধন্যবাদ।” কি লজ্জারে তার!
বাঙ্গাল জাত সেকুলারিজম গ্রহণ করতে যাইয়া, তার কথাবার্তা, চালচলনে সোজা কথায় হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি গ্রহণ করসে। সে সেক্যুলার ও হইতে পারে নাই, তার আগের বৈশিষ্ট্য তো বিসর্জন দিসেই। বাংলা আর কলকাতার ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদের মধ্যে পার্থক্য এখন চোখেই পড়েনা।
পূর্ববঙ্গ আর পশ্চিমবঙ্গ আলাদা একটা স্পেসিফিক কারণে। পশ্চিমকে বলা হইসিলো পূর্বের সাথে থাকার জন্যে। ধর্মের কারণে তারা সেটা করেনাই। এই ধর্ম একটা বড় অবদান রাখসে দুই জায়গার ভাষার পার্থক্যের ব্যাপারে। পশ্চিমের ভাষার মধ্যে সংস্কৃতির প্রভাব বেশী, আর পূর্বের ভাষার মধ্যে উর্দু, আরবি, ফারসি। এই উর্দু, আরবি, ফার্সির প্রভাব ই এই অঞ্চলের সাহিত্যের সৌন্দর্য। সেই সৌন্দর্য আপনি পাবেন ফররুখ, শওকত ওসমান, মুজতবা আলী, শফিইউদ্দীন সর্দারের লেখায়।
স্বাধীনতার পর থেকে এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। পাকিস্তান থেকে আলাদা হওয়ার ছুতোয়, বাংলা ভাষার সৌন্দর্যকে ম্লান করে দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে ঐসকল শব্দের স্টলে বসতে থাকে সংস্কৃত শব্দ। ভাষার সৌন্দর্য হচ্ছে, অন্য সব ভাষা থেকে শব্দ সহজে নিয়ে নেয়ার ক্ষমতা। এই জন্যে যারা এককালে আমাদের শাসন-শোষন করেছে, সব ভাষা থেকেই কোন না কোন শব্দ পাই আমাদের ভাষায়। এখনো একই কাজ চলছে। ইংরেজি শব্দের অবাধ প্রবেশ তো আছেই, সাথে এখন চলছে সংস্কৃত শব্দের উলঙ্গ প্রবেশ। সংস্কৃতর প্রবেশে সমস্যা ছিলোনা, যদিনা সেটার বেশীরভাগ শব্দ হিন্দুয়ানী হতো। “পানি” “”জল” কিংবা “জল” “পানি” হয়ে যাক সমস্যা হয়না। কিন্তু “বিয়ে” যখন হিন্দু সংস্কৃতির সাথে রিলেটেড “গাঁটছড়া” হয়ে যায়, তখন প্রব্লেমের গভীরতা ধরতে পারা জরূরী।
শাসকের ভাষা যদি একটা রাষ্ট্র গ্রহণ করা শুরু করে, তাইলে এখন আমাদের শাসক কে ? আমরা সংস্কৃত কিংবা হিন্দুয়ানী শব্দ গ্রহণ করছি কেন? আপনারা তো সেকুলারিজম বলতে সবকিছুতে ধর্মহীনতার কথা বলসিলেন। তাইলে, আপনাদের ইম্পোরট করা শব্দ কেন হিন্দু ধর্মের সাথে সম্পর্কিত হবে ? আপনাদের এইরকম লজ্জা কেন ? এইটা “ছেচয়াড়াইজম” ও না। এইটা হোল “হিন্দুইজম”। একটা ভাষার রূপ পরিবর্তন করিয়ে, তার স্বকীয়তা ত্যাগ করিয়ে, তাকে উলঙ্গ করে ফেলা হলো।
(বড় লেখা লিখতে পারিনা। চিন্তা সব এলোমেলো হয়ে যায়।)