ঢাকার বাইরে
রাত গভীর হয় ধীরে ধীরে। চিটাগং রোডে চলমান গাড়ির সংখ্যাও কমে আস্তে আস্তে। কিন্ত রাত্রির নিস্তব্ধতায় রিকশা চলার আওয়াজও যেন কানে বাজে অনেক দূর হতে। সারাদিনের কাজ শেষে একটু অবসর পাওয়া শ্রমিকের দল বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে ফিরে আসে বাজার থেকে আর তাদের মোবাইলে বাজতে থাকে পুরানো হিন্দী ছবির গান। রাতের খালি হাইওয়েতে পুরোদমে স্পীড ছেড়ে দেয় ড্রাইভার আর গাড়ির চাকাও লাগামহীন ঘোড়ার মতো চলতে থাকে পুরোদমে। সারাদিনের ধুকতে ধুকতে চলা গাড়িগুলো বিশ্রাম নেয় গোয়াল ঘরে। মাঝে মধ্যে আবার কানে আসে পুলিশ-এম্বুলেন্স এর দ্রুতগতির পিউ পিউ আওয়াজ। ব্যস্ত এই নগরীর বিশ্রাম নেই এক মুহূর্তের জন্যেও। মাত্র তো ঘন্টা ছয়েক। এরপরে আবারো শুরু হবে মহা কর্মযজ্ঞ।
আজব শহর, ব্যস্ত শহর, জ্যামের শহর আরো যতই বিশেষণ দিতে রাজি হইনা কেনো, "যাদুর শহর" বলতে আমি সবসময়ই নারাজ ছিলাম। বারান্দার রেলিং এ পা তুলে দিয়ে চলমান গাড়িগুলোর দিকে তাকিয়ে থেকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম মাত্র। যাদু তো সবসময় পজিটিভ জিনিস হবে, এমন কিছু না। এই যে, ঘরে থেকে বের হলে চোখের পলকে সারাদিন শেষ, এমন যাদু আর কয়টা শহর দেখাতে পারে? চোখের পলকে ঘন্টার পরে ঘন্টা চলে যাবে, টের ই পাবেন না। মানুষের ও ধয্য বইকি। উত্তরা থেকে দেখতে দেখতে যাত্রাবাড়ি চলে আসলাম; দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিপরীতদিকের রাস্তায় গাড়ির সারি কোনজায়গায় বাকি দেখলাম না। আল্লাহ জানেন কতক্ষণ ধরে ওনারা বসে আছেন একেকজন।
"যাদুর শহর" তো অবশ্যই। "কালো যাদুর শহর" বলতে দোষ কোথায়?
