প্রশ্ন করার ধরণ
প্রশ্ন দুই ধরণের ব্যাপারেই করা যায়। নতুন কিছু যা শিখছি, তার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা তুলনামুলক ভাবে সহজ। কিন্ত যা ইতিমধ্যে জানি, তার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা একটু কঠিন। কিন্ত দ্বিতীয়টি প্রথমটির থেকে আরো বেশী জরুরী।
নতুন শেখা একটি ব্যাপার আমাদের মনে ধাতস্থ হতে একটু সময় নিয়ে। সেটার প্রায়োগিক ব্যবহারে অভ্যস্ত হতেও সময় প্রয়োজন। ব্যাপারটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে অনেক কিছু জানা প্রয়োজন আগে, নাহলে প্রশ্ন করবো কিভাবে?
কিন্ত একটা ব্যাপার মনের ভেতরে এতোই পুরনো যে, যা মনের অনেক গভীরে তীব্র ভাবে শেকড় গেড়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে নিজের মনের সাথে যুদ্ধে নামতে হয়; কেননা আমাদের মনে প্রশ্ন তুলতে ভয় পায়। তার চিরাচরিত জ্ঞান নিয়ে তার ওভার কনফিডেন্স তাকে অন্যকোন দিক থেকে চিন্তা করতে দেয়না সহজে। জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে "কেন" প্রশ্ন গড়ে তুলার পাশাপাশি নিজের রুটকে নেড়ে ফেলতে পারার সাহস অর্জন করাও জরুরী মন হয় আমার কাছে। একটা সিস্টেমের এগেইন্সটে দাঁড়াতে হলে, সেই সিস্টেমের সবকিছুকে প্রশ্ন করার সাহস অর্জন করতে হবে। প্রশ্ন থেকে উত্তর উঠে আসবে আস্তে আস্তে।
আমাদের দুর্বল স্কুল-কলেজের শিক্ষা মানসিকভাবে আমাদের প্রশ্ন করার এবিলিটিই নষ্ট করে দেয়। তাই ছোট বেলা থেকে যা জানি আর শিখেছি, তার বাইরে কিছু দেখলে মাথা নষ্ট হয়ে যায়। নিজের জানার ভাইরে সবকিছুকে মিথ্যা মনে হয়। মনের মধ্যে ওভার কনফিডেন্স তৈরি হয় নিজের জানাকে নিয়ে। ইতিহাস বলেন, ধর্ম বলেন এগুলো নিয়ে আমাদের মনের মধ্যে কিছুটা মিথ তৈরি হয়েছে অনেক বছর যাবত। তাই এগুলো নিয়ে কারো কাছে কারো জানার বাইরে কোন ইনফো দিলে, তাদের মাথা পুরোপুরি আউলিয়ে যাবে। পুরোপুরি অস্বীকার করে বসবে সব। চিন্তাই করতে পারবে না তাদের জানার বাইরে আরো কতকিছু পরে আছে বাইরে।
জ্ঞানের প্রধান স্টেজ হলো, আমি কতোটা জানিনা তা স্বীকার করে নেওয়া। পুরাতন জ্ঞানকে ভেঙে নতুন কিছু গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করা। শুধু নতুনকে নয়, পুরাতনকেও প্রশ্ন করার চেষ্টা করা।